জোহরের আজান হলেই সাবিনা বিবি র গজ গজনি শুরু হয়ে যায় ।
“সংসারে মুনিষ আমি, জাহানের কাজ! আমি গতর খাটায় মরি আর মিনষে হাওয়া লাগিয়ে বেড়ান ”
আজও মুরগীর খুল্লা থেকে ডিম বের করতে করতে সাবিনা গজ গজ করেছিলো,” মাগী কি দরকার ছিলো মরদের কথা না শোনার! ”
বড় বৌমা বাসন মাজছিলো কল পাড়ে ।
” কার কথা কন মা? ”
” কার কথা আর কই, মাগী বেহেশতের হাওয়া খাচ্ছিলি, দুধ ফল মধু, সইলো না।গন্দম ফল চায় ।”
“ও, তাই বলেন, হাওয়া বিবির পরে আপনার রাগ ”
” সামনে পাইলে কাট্টা ফেলতাম, তার লাইগা এতো কষ্ট ”
” হাত চালায় কাজ করেন, মগরেবের পর মতিউর চাচা র বাড়ি মিলাদ ”
উঠোনে বসেছে পুরুষরা, পর্দা টাঙিয়ে লম্বা বারান্দায় মহিলা মহল । মাঝে মৌলভী সাহেব । ভিন গাঁয়ের নাকি! অনেক কোরান হাদিস জানা । টকটকে ফরসা ।চাপ দাড়ি ।দেখেই মনে হয় পরেজগার ইবাদত বন্দেগীর লোক ।
লুতফা একাই বসে আছে, শাশুড়ি গেছে চাচার বাড়ির ভিতরে হাতে হাতে কাজ করতে । মহিলা আছে কয়েক জন, কেউ বাচ্চা কে ঘুম দিচ্ছে, কেউ গুজ গুজ করছে পাশের জনের সাথে ।
ভাদ্র মাসের পিচপিচে গরম, জান্নাতের বর্ননা দিচ্ছেন মৌলভী সাব, চিরবসন্ত। আহা যদি পায়!
দুধের নদী, মধুর নদী… শুধু গন্দম ফল খাওয়া যাবে না ।কি এমন কঠিন কাজ!
হটাৎ করে লুতফার মনে হয়, সে বিবি হাওয়া । বেহেস্তের বাগানে ফুল তুলছে ।ঐ তো গন্দম গাছ, ওদিকে যাওয়া যাবে না ।কিন্তু গন্দম গাছের নিচে নতুন মৌলভী ওয়াজ করে কেন? পায়ে পায়ে এগিয়ে যায় লুতফা, হ্যাঁ তাই তো । মৌলভী ওয়াজ করছে… বিবি হাওয়ার নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণের গল্প ।
হটাৎ লুতফার গন্দম ফল খাবার ইচ্ছা করতে লাগলো খুব ।