শ্যামাপ্রসাদ ঘোষ -এর একটি কবিতা ‘মন কেমনের অসুখ’

Advertisement

মন কেমনের অসুখ


শ্যামাপ্রসাদ ঘোষ

রাজামশাই এর ছেলের অসুখ
কী অসুখ কেমন অসুখ কেউ হদিশ পায় না।
রাজবৈদ্য হাল ছাড়তেই ডাক পড়ল অমল কবিরাজের।
কবিরাজ নাড়ি টিপে বললেন,এ মন কেমনের অসুখ গো
সারা গায়ে ধুলো মাখতে হবে, তবে যদি সারে।
ছেড়ে আসা গ্রাম থেকে ধুলো আনতে হবে মহারাজ
আপনাকে নিজে গিয়ে আনতে হবে নিজের হাতে।
যান বেরিয়ে পড়ুন।ধুলো নিয়ে আসুন দু প্যাকেট
পথের মাঝে যে মিহি ধুলো থাকে, সেই ধুলো।

কদিন পরে রাজামশাই ফিরে এলেন খালি হাতে।
বললেন, পথে ধুলো নেই কব্রেজমশাই,
আমার নিজের গ্রামে নেই, পাশের গ্রামে নেই
তার পাশের…কোনো গ্রামে ধুলো নেই।
সব পথে আমিই তো কংক্রিটের প্রলেপ দিয়েছি।
এখন কী উপায়!

রাজপুত্র বলল, আমাকে অনুমতি দাও বাবা
আমি একা গ্রামে গ্রামে ধুলোমাখা পথ খুঁজতে যাব।
এখানে না পেলে অন্য কোথাও, অন্য কোনো গ্রামে।
আমি পায়ে ধুলো লাগিয়ে পথ চলব,চলতেই থাকব
আর পাখিরা গান শোনাতে শোনাতে
আমার পিছন পিছন আসবে।
পথ আমার বন্ধু হবে। নদী আমার বন্ধু হবে।
ঝুরি নামা বট আমায় বন্ধু হবে।
আমি বটের তলায় বাঁশের মাচায় বসে রাখালের বাঁশি শুনব।
আর আমার মন কেমন করবে না
আমার মন ফুলের মত ভালো হয়ে যাবে।
নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে আমি রবিঠাকুরের গান গাইব
সেই যে সেই গানটা যে গানটায় আকাশের কথা আছে
সূর্যের কথা আছে, তারার কথা আছে, বিশ্ব ভরা প্রাণের কথা আছে।
সুরটা কেমন যেন, কেমন যেন…. হুঁ হুঁ হুঁ – হুঁ….হুঁ হুঁ হুঁ – হুঁ….

Advertisement
Advertisement
Advertisement

Leave a Reply

Developed by